সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

নরমাংস খেকো সাধুদের কথা, জানলে শিউরে উঠবেন!

নরমাংস খেকো সাধুদের কথা, জানলে শিউরে উঠবেন! সাধুরা কি সত্যিই মানুষের মাংস খায়? বাস্তবিকই কি এমন সাধুরা মৃতদেহের উপর বসে সাধনা করেন? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা চালানো হবে। তবে বহু বছর এদের কোনও দেখা নেই। অনেকে বলেন ভারতের বেনারসের কিছু নর্জন শশ্মানে আজও আগরীদের দেখা মেলে। কিন্তু এই বক্তব্য কতটা সঠিক, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বৈকি! তবু আগরি সাধুদের বিষয়ে জানার চেনার চেষ্টা করব। তাদের বিশ্বাস, তাদের জীবনযাত্রার সম্পর্কে তথ্য ঘেঁটে দেখবো, সত্যিই এমন সর্বোত্তম সাধকেরা আজও আছেন কিনা এই ভূ-ভারতে। শিবের আরাধনায় মত্ত একদল সাধক ভগবান শিবের পাগল সাধক হলেন এরা। এদের মন-প্রাণ জুড়ে শুধু শিবের অবস্থান। অনেকে অভিযোগ করেন আগরি সাধুদের আরাধনার পদ্ধতি বাকিদের থেকে আলাদা। কথাটার মধ্যে কোনও মিথ্যা নেই। এনারা একেবারে অন্য পদ্ধতিতে দেবাদিদেবের পুজো করে থাকেন। বেশ কিছু বইয়ে লেখা রয়েছে আগুরি সাধুদের কাছে সবাই শবদেহ। সেই কারণেই কিছু নিয়েই এদের কোনও মোহ-মায়া নেই। এরা সব জাগতিক লোভকে ভুলে ভগবান শিবকে পেতে চান। বিশ্বাস করেন প্রাণের উৎস শিবের থেকে, আর শেষও শিবের শরীরের গিয়েই। তাই তো এদের কাছে পরিষ্কার আর নোংড়া বলে কিছু হয় না, সবই ভগবানের দান। ভগবান শিবকে পেতে এরা এমন সাধনা করেন যে নানা ধরনের অলৈকিক শক্তির অধিকারি হয়ে ওঠেন একেকজন সাধু। প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ অনুসারে আগরি সাধুরা যে কোনও রোগ, এমনকী ক্যান্সার রোগীকে পর্যন্ত সারিয়ে তুলতে পারে। এমন শক্তি রয়েছে এদের। যদিও এমন বক্তব্যের সপক্ষে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। জন্ম বৃত্তান্ত আগরি সাধু হওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। টানা ১২ বছর কঠোর সাধনার পর আগরি গুরুর আশীর্বাদে নিজের ধার্মিয় যাত্রা শুরু করেন আগরি সাধুরা। আর তখনই জন্ম হয় এক চরম সাধকের। যাদের বস্ত্র হয় মৃতের জামা-কাপড়ের ছেঁড়া অংশ। শরীরে থাকে মৃত দেহের ছাই। এখানেই শেষ নয়, এমন সাধকদের সারা জীবন বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়, যেমন- প্রত্যেক আগরি সাধুকে একজন গুরুর অধীনে থাকতে হয়। গুরু যা বলেন, সেভাবে জীবনযাপন করতে হয়। সংগ্রহ করতে হয় মৃদেহের খুলি, যা দিয়ে শুরু হয় তাদের সাধনা। আগরি সংস্কৃতি মূলত নদীর ধারের কোনও নির্জন শশ্মানে অথবা গভীর জঙ্গলের অন্দরে এরা বসবাস করেন। খান মৃত মানুষের মাংস। এরা বিশ্বাস করেন এমনটা করার মধ্যে দিয়ে তারা ভক্তির প্রদর্শন করছেন। কারণ মৃত্যুর পর আত্মা শরীর ছেড়ে অন্য জগতে চলে যায়। তাই যে কোনও মৃত পশুর মাংস খাওয়া আর মানুষের মাংস খাওয়ার মধ্যে কোনও পার্থক্য় খুঁজে পান না আগরিরা। শুধু তাই নয়, মৃতদেহ যে কাঠে পোড়ানো সেই একই কাঠে তারা রান্না করে খান। এমনও বিশ্বাস আছে যে আগরি সাধু বাবারা মৃতদেহের উপর বসে খুলিকে সামনে রেখে সাধনা করেন। কিন্তু চর্ম চক্ষে এমন দৃশ্য কেউ দেখেছে কিনা জানা নেই। এদের সম্পর্কে যা কিছু জানা গেছে তার বেশিরভাগই প্রাচীন বই-পত্রে লেখা রয়েছে। সভ্য সমাজের থেকে লক্ষ মাইল দূরে জীবনযাপন করা এমন সাধকদের খোঁজ পাওয়ার সাধ্য কারও নেই। এদের কি কোথাও দেখা পাওয়া যায় না? একেবারে যে পাওয়া যায় না, তেমনি নয়। অনেকে বিশ্বাস করেন এখনও ভারতের দুর্গম পাহাড়-জঙ্গলে বহু আগরি সাধু বসবাস করেন। আর শিবরাত্রির সময় তাদের মধ্যে অনেকে পশুপতি নাথ মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। যদিও সেই সময়ও তারা লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতেই বেশি পছন্দ করেন। আগরি সাধু বাবাদের সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য ১. এমন সাধুরা নিজের মনে কখনো রাগ বা দুঃখ চেপে রাখেন না। কারণ তারা মনে করেন রাগত মন সাধনার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। ২. এরা কুকুরের সঙ্গে বসেও খাবার খান। কারণ এমনটা করলে জীবের মধ্যে পার্থক্য় ঘুঁচে যায়। কুকুর যা মানুষও তাই, কোনও পারাক নেই- এমন যুক্তিতে বিশ্বাসী আগরি সাধুরা। ৩. মৃত দেহের ছাই জীবনের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দিককে নির্দেশ করে। তাই তো আগরি সাধুরা বিশ্বাস করেন সারা শরীরে ছাই মেছে থাকলে কোনও ধরনের রোগ-ব্যাধি ছুঁতে পারবে না। ৪. আগরি সাধুদের কাছে যে মানব খুলি থাকে, তা দিয়ে তারা যেমন সাধনা করেন, তেমনি তাতে মদ ঢেলে পানও করেন। ৫. আগরি সাধুরা গাঁজা খেতে খুব পছন্দ করেন। এমনটা করার মধ্যে দিয়ে তারা এই জগত থেকেও যেন অন্য জগতের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন। অনেকে বলেন গাঁজা খেয়ে নেওয়ার কারণে সাধনায় আরও বেশি করে নিমজ্জিত হয়ে যেতে পারেন এমন সাধকেরা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন